প্রসঙ্গ ॥ চাওয়া এবং পাওয়া বনাম কষ্ট
লেখক – প্রতিষ্ঠাতা এনাম ডিজিটাল মার্কেটিং
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমাকে প্রায়ই কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। কখনো পরিবার থেকে। আবার কখনো বন্ধু বা শুভাকাঙ্খী মহল থেকে। যেমন: আমার হৃদয় নাকি পাথরের মতো শক্ত। আমি নির্দয়, আবেগ কম, অনুভূতি কম, ঠকি কম ও কষ্ট পাই কম ইত্যাদি ইত্যাদি আরো অনেক বিশেষণ রয়েছে।
আসলেই কি তাই! এগুলো কিছুতেই মানতে পারলাম না। মানুষ মাত্রই আবেগ তাড়িত বা আবেগপ্রবণ। তবে কিছু বিষয় আমি মেনে চলার চেষ্টা করি মাত্র। কষ্টটা মূলত আসে চাওয়া এবং পাওয়ার বিস্তর ব্যবধান থেকে। এই পাওয়াটা সম্পূর্ণরূপে অন্য ব্যক্তির উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ কেউ দিলে আপনি পাবেন অন্যথায় নয়। কিন্তু চাওয়াটা সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তির নিজের নিয়ন্ত্রণাধীন। যে কোনো উপায়েই হোক অপরের এমনকি নিজ পরিবারের সদস্যদের নিকট হতে চাওয়া বা প্রত্যাশা স্তর বা Expectation Level টা সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখতে পারলে কষ্টের মাত্রাটা অনেক কম অনুভূত হয়। একটা ছবি যোগ করেছি দেখেন। আমার এক্সপেক্টেশন লেবেল সর্বদাই সবার নিচেরটা।
তাহলে রহস্যটা কি?
ঘটনা-১
একটা ছোট্ট উদাহরণ দেই। ধরুন আপনি থাকেন নিচের ঠিকানায়:
বাড়ি নং ১৭,
রোড নং ০৬,
সেক্টর নং ০৬ পার্ক,
উত্তরা মডেল টাউন,
ঢাকা- ১২৩০
আপনি আপনার ঘনিষ্ট একজন প্রতিবেশীর (বাড়ি নং ১৫) দাওয়াত পেলেন। উনারা পনেরো দিন আগে থেকেই আপনাকে এবং আপনার পরিবারের সকল সদস্যকে এমনভাবে আমন্ত্রণ জানালেন যে, আপনারা ছাড়া তাদের চলেই না। ঐ বাড়ির বৌ-বেটি সারাদিন আপনার বাড়িতেই থাকে। আমার ভাবিজানে আপনারে কয় “তুমি তো মমিসিংগা ভূত! বদ্দিকালের কম্প্লিটটা ফালায় দিয়া একটা নতুন কম্প্লিট বানায়ে লও। প্রতিবেশী ফেলানির মা বলে কথা। মান সম্মান আছে না।”
আপনি তাই করলেন। খুশি মনে পেওনিয়ার কার্ড দিয়ে বেশি বেশি টাকা তুইলা নিজের, লগে দুই মা (মেয়ে) আর ভাবিজানের জন্যও ড্রেস কেনার ব্যবস্থা করলেন। দুই মায়েরে গায়ের হলুদের ড্রেস, বিয়ে এবং বৌভাতের ড্রেস এমনকি সাজগোজ করার পার্লারের খরচা-পাতিও দিলেন।
কষ্টের সূত্রপাত এখান হতে-
গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগের মূহূর্তে ফোন এলো স্থান সংকুলান না হওয়ায় বাড়ি প্রতি একজন পুরুষ ও একজন মহিলা অনুষ্ঠানে যেতে পারবেন। আপনার যাওয়ার ইচ্ছে নেই। দুইজন কাকে কাকে পাঠাবেন! তার ভিতরে একজন পুরুষ! অথচ বাড়িতে পুরুষ মানুষ তো আপনি একা। গোটা বাড়ি ফুঁসছে! করণীয় কি?
যদি অন্যের নিকট প্রত্যাশার স্তরটা আমার মতো কিছুটা নিচু হতো, তাহলে কারো তেমন কষ্ট লাগতো না।
ঘটনা-২
একজনকে এক মাস পর ফেরত দেয়ার শর্তে পাঁচ লক্ষ টাকা ধার দিয়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ান্তে ঐ ব্যক্তি মাত্র এক লক্ষ টাকা ফেরত দিতে এসেছে। ধার দেয়ার সময়েই আপনাকে ভাবতে হবে আপনি পাঁচ লক্ষ টাকা একবারে কখনো ফেরত পাবেন না। এমনকি পুরো টাকাটা অনাদায়ীও হতে পারে। প্রয়োজনে ধার দেয়া থেকে বিরত থাকুন।
ঘটনা-৩
টাঙ্গাইল থেকে আপনার ছোটো শ্যালক এসেছেন সঙ্গে নববধূ। বিয়েতে কিছু টাকা উপঢৌকন পেয়েছেন। নতুন ব্যবসা শুরু করতে চান। আর মাত্র দশ লক্ষ টাকা হলেই তিনি তার ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আপনি ব্যাংকার আর উনি নতুন ব্যবসায়ী। এমন ঘটনায় উনি কতটুকু ব্যবসা-সফল হবেন এটা আপনিই ভালো বোঝেন। তাকে যথাযথভাবে আপ্যায়ন করে টাঙ্গাইল হতে যাওয়া আসা খরচ ও নতুন বৌ এর জন্য কিছু জামাকাপড় কিনে দিয়েও আপনি বিদায় জানাতে পারেন। আবার অনাদায়ীর মতো ধাক্কা সামাল দেয়ার সক্ষমতা থাকলে পুরো দশ লক্ষ টাকাই তাকে ধার দিতে পারেন। আবার অনাদায়ী হবে জেনেও পরোপকারের স্বার্থে ধার দিতে পারেন। কোনো বাঁধা নেই, মনে কোনো কষ্টও থাকবে না আপনার।
ঘটনা-৪
সর্বাবস্থায় কোনো পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই আমি সচরাচর যা করি।
Click Start > Click Shutdown > Click OK.
Again to start my Bike.
Push self > Pull Clutch > Press Gear > Go away.
ঘটনা-৫
উপরোক্ত ঘটনাবলী পুরোপুরি কাল্পনিক। যদি কোনো ঘটনা কারো বাস্তবতার সাথে হুবহু বা আংশিক মিলে যায়; তবে সেটা হবে কাকতালীয়, অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্খিত। তার জন্য লেখক কোনো ক্রমেই দায়ী নয়।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
Deshi Amazon – দেশী আমাজন
Deshi Amazon – The best E-commerce Platform in Bangladesh